ইউক্রেইন রাশিয়ার যে কোনো সময় যুদ্ধ


ইউক্রেইনে ‘যে কোনো সময়’ আগ্রাসন চালাতে রাশিয়ার সেনারা প্রস্তুত হয়ে আছে এবং পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মার্কিন নাগরিকদের দেশটি ছাড়া উচিত বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেইনের সীমান্তে এক লাখেরও বেশি সেনা সমাবেশ ঘটানো সত্ত্বেও রাশিয়া বলে আসছে, ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালানোর কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।
কিন্তু উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকায় যুক্তরাজ্য, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, লাটভিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও নিউ জিল্যান্ড তাদের নাগরিকদের ইউক্রেইন ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে।
অপরদিকে পশ্চিমা দেশগুলো মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জানিয়েছে বিবিসি।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান বলেছেন, “রাশিয়ার বাহিনীগুলো এখন একটি বড় ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার মতো অবস্থানে আছে। কী হতে যাচ্ছে তা নির্দিষ্টভাবে জানি না আমরা, কিন্তু ঝুঁকি এখন খুব বেশি এবং আসন্ন হুমকির মুখে অবিলম্বে (ইউক্রেইন) ছেড়ে আসাই বিচক্ষণ হবে।”
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছেন কি না, তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন ‘জানেনা’ বলে জানিয়েছেন সালিভান কিন্তু বলেছেন, ক্রেমলিন সামরিক অভিযান চালানোর অজুহাত খুঁজছে এবং আকাশপথে ব্যাপক বোমাবর্ষণের মধ্য দিয়ে তা শুরু হতে পারে।
গত সপ্তাহে ইউক্রেইনের সীমান্তে রাশিয়ার আরও সেনা মোতায়েন ও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কৃষ্ণ সাগরে সামরিক মহড়া শুরু করার পরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সতর্ক করার পর সালিভান এসব মন্তব্য করলেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছিলেন, ইউক্রেইন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা বাড়ানোর বিষয়টি ‘দেশটির তৎপরতা বৃদ্ধির খুবই উদ্বেগজনক লক্ষণ’।
তিনি বলেছেন, “আমরা এমন একটি জানালায় আছি যখন আগ্রাসন যেকোনো সময় শুরু হতে পারে আর স্পষ্ট করে বলতে গেলে, অলিম্পিকের সময়ও হতে পারে (বেইজিংয়ে চলা শীতকালীন অলিম্পিক ২০ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে) ।”
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার অভিযান শুরু হওয়ার পর কোনো মার্কিন নাগরিক যদি ইউক্রেইনে আটকা পড়ে তবে তাকে উদ্ধার করতে সেখানে সেনা পাঠাবেন না তিনি।
শুক্রবার এক ভিডিও কলে আটলান্টিকের দুই পারের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাইডেন। এই আলোচনায় তারা একমত হয়েছেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালায় তবে দেশটিকে গুরুতর অর্থনৈতিক পরিণতির মুখোমুখি করতে তারা সমন্বিত পদক্ষেপ নেবেন।
এরমধ্যে পোল্যান্ডে আরও তিন হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব সেনা আগামী সপ্তাহেই পোল্যান্ডে হাজির হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা ইউক্রেইনে লড়াই করবে না কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
শনিবার বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেশী বেলারুশে ব্যাপক একটি সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া আর ইউক্রেইন অভিযোগ করে বলেছে, তাদের সমুদ্রে প্রবেশের পথ বন্ধ করে রেখেছে রাশিয়া।
রাশিয়া বলেছে, প্রতিবেশী সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র ইউক্রেইন যাতে নেটোতে যোগ না দেয়, তা নিশ্চিত করতেই ‘রেড লাইন’ প্রয়োগ করতে চায় তারা।