আমরা প্রতিটি মানুষ পরিবার থেকে গড়ে উঠি, কেউবা আবার সমাজের বিভিন্ন অংঙ্গন থেকে বেড়ে উঠি । আমরা দেখতে পাই আমাদের বেড়ে উঠার পর অনেক গুলো অমিল চলে আসে তার মধ্যে অন্যতম অমিল হলো আমরা ঐক্যবদ্ধ না, একটি পরিবার হলোও এক দেহের মত না। তার মধ্যে গুরুত্বপূণ বিষয় হলো আমরা বড়রা ছোটদে্র অবমূল্যায়ন করি ! তাদের ছোট বলে দূরে রাখি, তাদের শিখানো মতামত দেওয়া-নেওয়ার চাইতে অবমূল্যায়ন করে থাকি। এমনকি তাদের এটা মনে করি, দূর সে ছোট মানুষ, সে কি বুঝবে! সে কি ইনকাম করে ? তার দরকার কি?, এভাবে হেয়ো করে অবমূল্যায়ন করে দূরে রাখি তাদের। এতে করে তারাও ভিতরে ভিতরে বড়দের ব্যাপারে নেগেটিভ ধারণা নিয়ে বেড়ে উটতে থাকে, তাদের ছোট বলে পরিবারে অবহেলিত করার কারনে তারা হতাশ হয়ে যায়, ভেংঙ্গে পড়ে!
আবার আমরা অভিভাবকগন তাদের মতামত না নিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত গুলো চাপিয়ে দেই, শুধু চাপিয়ে দিয়ে চুপ থাকিনা বরং বল প্রয়োগও করি। এই পরিস্থিতিতে তারা যখন সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে কিছু একটা করে তখন বিভিন্ন খারাপ আচরণ করি তাদের সাথে, এতে করে তারা পরিবারের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলে, বুঝতে পারেনা সঠিক-বেঠিক, তাই যেখানে তারা মূল্যয়ন পায় সেখানে বাসা বাঁধে এবার হোক সে জায়গাটি ভালো কিংবা খারাপ !
আমাদের উচিত পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে বন্ধুর মতো ভাবা, সবাই একটি বন্ধনে আবদ্ধ থাকা, ভালোবাসার বন্ধনই হবে সবার বন্ধন, শীষাঢালা প্রাচীরের ন্যায় হবে সবার অবস্থান। বড়রা নিজেদের ন্যায় ইনসাফের মাপকাঠিতে দন্ডয়মান রাখবে। ছোটরা বড়দের সম্মানের সাথে বড়দের আনুগত্য করবে, প্রতেকে এমন কথা বলবে যা অন্যের মনে কষ্ট দেওয়ার কারণ না হয়ে থাকে।
সাধারণত আমরা যখন রেগে কথা বলি আমাদের কথা গুলো এলোমেলো হয় তখন এমন কথা হওয়া উচিত,যেভাবে মুখ থেকে থুতু বের হয়। থুথু যেমন ভিতরে নেওয়া যায় না, তেমন আমাদের কথা গুলো বলার পর আর ভিতরে নেওয়া যায় না। তাই কথা বলার সময় সবচেয়ে উত্তম ভাষায় কথা বলতে হবে।
মনে রাখতে হবে একটি মানুষ তার ন্যায় অন্যায়ের জন্য বাহিরের মানুষের কথা গুলো সহজে নিতে পারে কিন্তু পরিবারের লোকজনের কথা গুলো সহজে নিতে পারেনা। এতে করে মান-অভিমান, সম্পর্কের অমিল, এমনকি সম্পক নষ্ট হয়ে যায়। তাই পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের উচিত এমন কথা বলা যা অন্যের কষ্টের কারণ হয়ে না হয় দাড়ায়।
পরিবার হচ্ছে সবার আশ্রয় স্থল, সবাই আশ্রয় খুঁজে পরিবারে, সেই আশ্রয় যদি ব্যক্তির জন্য জাহান্নাম হয়ে যায় তাহলে পুরো দুনিয়াই তার জন্য জাহান্নাম। সে জন্য পরিবারের অভিভাকদের অনেক দায়িত্ব নিতে হয়, যেভাবে বট বৃক্ষ নেয়। পরিবার টিকে রাখতে হলে একে অন্যের প্রতি সম্মানবোধ, ভালোবাসা, ধৈর্য, সহযোগিতা, সহমর্মিতা, আন্তরিকতা রাখা খুবই প্রয়োজন, তাহলেই পারিবারিক শিক্ষা হবে সমাজিক অবক্ষয় থেকে বাঁচার মূল হাতিয়ার।
আমরা অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মূল্যায়ন না করলে পদে পদে ভুল করবো কেননা সামষ্টিক কাজ গুলো পাবলিক প্লেসের কাজের সিদ্ধান্ত নিতে হবে অভিজ্ঞতা লব্ধ জ্ঞান থেকে । একজন সচেতন ব্যক্তি কখনো একাকী কোন কাজ করেনা। তিনি জানেন কাজের ভালো ফলাফল পেতে হলে অবশ্যই সবাইকে সাথে নিয়ে করতে হবে।
আমরা সমাজের পাবলিক কাজ গুলোকে মূল্যয়ন করলে দেখতে পাই সামষ্টি গত সিদ্ধান্ত নিয়ে যে কাজ তা সুন্দর ও মজবুত, আর একক কাজ গুলো হয়তো কিছু সময় খুব ভালো ভাবে হয়ে থাকে, কিন্তু যোগ্য উত্তরসূরী না থাকায় তা আবার ভেংঙ্গে পড়ে। পরিবারে হোক সমাজে হোক কিংবা রাষ্ট্র হোক সকল সামষ্টিক কাজে বড়-ছোট সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিচালিত হলে তা স্খায়ী হয়, না হলে কাজ যতই সুন্দর হোক না কেন তার জন্য সমালোচিত হতে হয়।
বড়দের অভিজ্ঞতা আর ছোটদের শেখা দুইটার মাধ্যমে যদি একটি কাজ বাস্তবায়ন হয় তাহলে সে কাজ স্থায়ী ও সুন্দর হয়ে থাকে। যদি ঐ কাজটি ভুলও হয় তাহলে বিষয়টি সমলোচনা হবে না এবং যে কোন সমস্যার সুন্দর সমাধান করা যাবে। ঐ কাজ থেকে ভালো ফলাফল ভোগ করা যাবে বছরের পর বছর যুগের পর যুগ।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ জিল্লুর রহমান
ইমেইল: nagorikkantho2021@gmail.com
অফিস: ১৩১ মৌচাক-মালিবাগ, শাহজাহানপুর ঢাকা-১২১৭
Copyright © 2025 Nagorik Kantho. All rights reserved.